ঝিলিমিলি-তালবেড়িয়া ড্যাম ভ্রমণ গাইড ,অজানা সবুজ স্বপ্নভূমির সেরা ঘোরার ঠিকানা!

ঝিলিমিলি-তালবেড়িয়া ড্যাম ভ্রমণ গাইড

ঝিলিমিলি-তালবেড়িয়া ড্যাম

ঝিলিমিলি আর তালবেড়িয়া ড্যাম — যেন এক নীরব সবুজের স্বপ্নলোক! ছোট পাহাড়, কংসাবতী নদীর স্বচ্ছ জলে প্রতিফলিত আকাশ আর বনজ গাছপালা, দূরে লাল মাটির রাস্তা ধরে ছুটে চলা গাড়ি — সব মিলে যেন প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যাওয়ার এক পরিপূর্ণ ঠিকানা। এখানে সূর্যাস্তের সোনালি আলোয় জলরাশি আর পাহাড়ের আড়ালে খেলা করে মেঘেদের ছায়া। একবার গেলে বারবার যেতে মন চায়!

তালবেড়িয়া ড্যাম কোথায় অবস্থিত

তালবেড়িয়া ড্যাম টি বাঁকুড়া জেলার অন্তরগত রানিবাঁধ ব্লকের কাছে অবস্থিত।

ঝিলিমিলি গ্রামাঞ্চল এর আশেপাশেই বিস্তীর্ণ জঙ্গল এলাকা আছে।

বাঁকুড়া শহর থেকে প্রায় ৭০–৮৫ কিমি, কলকাতা থেকে প্রায় ২২০–২৫০ কিমি দূরত্ব।

তালবেড়িয়া ড্যাম কিভাবে যাবেন

কলকাতা থেকে হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে ব্যাংকুরা ট্রেনে যেতে হবে। তারপর ব্যাংকুরা থেকে গাড়ি বাসে ঝিলিমিলি-তালবেড়িয়া ড্যাম (১.৫–২ ঘণ্টা)।এছাড়া আপনি কলকাতা থেকে বাঁকুড়া আস্তে পারেন বাঁকুড়া থেকে আপনি বাস ধরে আপনি রানীবাঁধ হয়ে তালবেড়িয়া ড্যাম আস্তে পারেন , এছাড়া আপনি

রাস্তা পথে: কলকাতা থেকে গাড়ি বা ক্যাবে Durgapur Expressway ধরে বাঁকুড়া হয়ে ঝিলিমিলি রোড ধরে তালবেড়িয়া ড্যাম পোঁছাতে পারেন ।

বাস: Esplanade থেকে SBSTC সরকারি বাস চলাচল করে। এছাড়া আপনি রাতের বাস ধরে রানিবাঁধ পর্যন্ত আস্তে পারেন ।

তালবেড়িয়া ড্যাম এ কি কি দেখতে পাবেন

তালবেড়িয়া ড্যাম এ আপনি দেখতে পাবেন বড় বাঁধ, শান্ত জলরাশি আর নৌকা ভ্রমণ। এছাড়া আপনি দেখাতে পাবেন বিশাল সবুজ ঘেরা ঝিলিমিলি জঙ্গল , জঙ্গল রাস্তায় ধরে ধরে রয়েছে ওয়াচটাওয়ার , এই ওয়াচটাওয়ার থেকে আপনি দেখাতে পাবেন বনের সবুজ , এই বনের সবুজ দেখে আপনার মনে হবে যেন এক টুকরো আমাজন জঙ্গল আর এখানে শীত কালে মাঝে মাঝে দেখা যায় হাতির দল।

সুতান লেক: তালবেড়িয়া ড্যাম এর কাছে আছে একটি সুন্দর হ্রদ আর সুন্দর জঙ্গল , এই জঙ্গল মাঝে আপনি দেখাতে পাবেন বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখা যায় এই পাখির মন মধুর ডাক ।

সুতান লেক

রানিবাঁধ ঝিলিমিলি বনাঞ্চল: রানীবাঁধ ঝিলিমিলি বনাঞ্চল আপনি দেখাতে পাবেন ছোট ছোট ট্রেকিং পথ ও পিকনিক স্পট।

ঝিলিমিলি বনা

মুকুটমণিপুর: তার কিছু দূরে দেখাতে পাবেন কংসাবতী বাঁধ মুকুটমণিপুর , যা আপনি ওখানে সাইকেল ভাড়া নিয়ে ঘুরতে পারেন।

মুকুটমণিপুর

কোথায় থাকবেন

রিমিল ইকো রিসোর্ট: এখানে আপনি সরকারি ফরেস্ট রিসোর্ট এ থাকতে পারেন ,এছাড়া আপনি ট্রিহাউস বা কটেজে এ থাকতে পারেন এখানে থাকার মজাই আলাদা।

রিমিল ইকো রিসোর্ট

স্থানীয় লজ: এখানে আপনি Aparajita Lodge, Ahla Lodge ,এছাড়া আরও বেশি কিছু থাকার জন্য ব্যবস্থা আছে।

বনবিভাগের রেস্ট হাউস: এছাড়া আপনি বনবিভাগের রানিবাঁধ ফরেস্ট রেস্ট হাউস বুক করতে পারেন।


এছাড়া আপনি এখানে কম খরচের লোকাল রেস্ট রুম পাওয়া যায় ।

স্থানীয় খাবার

এখন কার স্থানীয় খবর বলতে গেলে ভাত , ডাল,মাছ,মাংস,ইত্যাদি এছাড়া আপনি বাঁকুড়া কিছু খাবার দেখাতে পাবেন যেমন

বাঁকুড়ার স্পেশাল: আলু-পটল পোস্ত, ইঁচড়ের দালনা, মোচার ঘন্টো, ভাপা দই ইত্যাদি ।

স্থানীয় খাবার

মিষ্টি: রসগোল্লা, সন্দেশ, খেজুরের পায়েশ, গোলাপ জামুন, বুদে, মিষ্টি ও টক দাই ইত্যাদি । এছাড়া আপনি রাস্তার ধারে দেখাতে পাবেন মুখরোচক ঝালমুড়ি, চা, পারাটা ইত্যাদি!

তালবেড়িয়া ড্যাম ঘুরতে আসার সেরা সময়

শীতকাল (নভেম্বর–ফেব্রুয়ারি) মাসে এলে আপনি মাঝে মাঝে হাতির দল নামতে দেখা যায়, ও এই সময়ে আপনি বন সবুজে ভরা দেখাতে পাবেন।

বর্ষাকাল (জুন–সেপ্টেম্বর) মাসে এলে তালবেড়িয়া ড্যাম ভরপুর জল থাকে, প্রকৃতি একেবারে সবুজ থাকে।

তালবেড়িয়া ড্যাম ঘুরতে আসার আনুমানিক বাজেট

বাজেট ট্যুর: ২–৩ জনের জন্য ট্রেন ও বাসে যাতায়াত, সস্তা লজ ২ দিন আর জন্য খরচ হবে আনুমানিক ২,০০০–৩,০০০ টাকা প্রতি জন।

মিডিয়াম: গাড়ি ও রিসোর্ট এর জন্য আনুমানিক খরচ হবে ৫,০০০–৮,০০০টাকা প্রতি জন (২ দিন)।

লাক্সারি: প্রাইভেট গাড়ি, ভালো রিসোর্ট, গাইড নিলে আপনার খরচ হবে আনুমানিক প্রায় ১০,০০০–১৫,০০০টাকা মতো প্রতি জন।

আমাদের তরফ থেকে আপনাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস

ন্যাচারাল ট্রেইল ভ্রমণে শূন্যপদে প্লাস্টিক ফেলবেন না।

স্থানীয় খাবার ট্রাই করুন, ও স্থানীয়দের সাথেও মিশুন আর তাদের থেকে জায়গার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানুন।

শীতে কালে অবশ্যই আপনি গরম জামা নিন।

✨ প্রকৃতির কোলে এক স্বপ্নময় দুদিনের ছুটি কাটাতে তালবেড়িয়া ড্যাম আর ঝিলিমিলি আপনার জন্য আদর্শ! 


খুব কম টাকাই ঘুরে আসুন শহরের ভিড় এড়িয়ে শান্ত পাহাড়ি গ্রামে! লাটপাঞ্চার

Previous Post Next Post